পশ্চিম সুন্দরবনের গভীরে ফেলে যাওয়া ৭৮ বাংলাদেশিকে বন বিভাগের মাধ্যমে কোস্টগার্ডের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) গত শুক্রবার ভোরে তাঁদের কয়েকটি স্পিডবোটে করে এনে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মান্দারবাড়িয়া চরে ছেড়ে যায়।
শনিবার (১০ মে) রাত ১১টার দিকে মান্দারবাড়িয়া বন ক্যাম্প থেকে কোস্টগার্ডের কাকা-দোবেকী ক্যাম্পের কমান্ডার আতিকুর রহমানের কাছে তাঁদের হস্তান্তর করা হয়। কোস্টগার্ড সূত্রে জানা গেছে, এসব ব্যক্তিকে মোংলা কোস্টগার্ড অফিসে নিয়ে যাওয়া হবে।
বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. মশিউর রহমান জানান, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বেশিরভাগই গুরুতর অসুস্থ এবং কিছু লোকের শরীরে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। একজনের হাত পর্যন্ত ভেঙে গেছে। বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় জরুরি ভিত্তিতে স্যালাইন, পানি ও খাবার সরবরাহ করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা ও পথ্য পাওয়ার পর তাঁদের শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নত হয়।
উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নড়াইল জেলার সাইদুল মোল্লা (২৭) ও আবু বকর (২২) জানান, দুই বছর আগে তাঁরা কাজের খোঁজে অবৈধভাবে ভারতে যান। সেখানে তাঁরা শ্রমিকের কাজ করতেন। ভারতীয় পুলিশ ৬ মে তাঁদের আটক করে এবং পরে সন্দেশখালীর বিএসএফ ক্যাম্পে হস্তান্তর করে। দুই দিন সেখানে রাখার পর তাঁদের সুন্দরবনের গভীরে ফেলে দেওয়া হয়।
বন কর্মকর্তা আরও জানান, আটককৃতদের বাড়ি খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায়। তাঁরা সবাই একাধিক সময় বাংলাদেশ থেকে কাজের উদ্দেশ্যে ভারতে গিয়েছিলেন। ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে তাঁদের আটক করে বিএসএফ হাতে তুলে দেয়, যারা পরবর্তীতে তাঁদের বাংলাদেশ সীমান্তে ফেলে রেখে যায়।
এ বিষয়ে মোংলা কোস্টগার্ডের মিডিয়া বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোনে সাড়া পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও ইতিমধ্যেই বিষয়টি নজরে এনেছে। সীমান্ত নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিএসএফের এমন আচরণ আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।